বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সর্বশেষ সংশোধিত নভেম্বর, ২০১৮) শ্রমজীবী নারী পুরুষের চাকুরি সংক্রান্ত বিভিন্ন অধিকার ও দায়িত্ব লিপিবদ্ধ করেছে। নারীদের জন্য প্রযোজ্য কিছু অধিকার নিচে উল্লেখ করা হল। সম্পূর্ণ আইনটি দেখুন এই খানে ।
চাকুরি দেবার সময় নারীর বিরুদ্ধে বৈষম্য আইনত নিষিদ্ধ । যোগ্যতা অনুযায়ী যে কোন চাকুরীতে নারী আবেদন এবং নিয়োগ পেতে পারেন।
বাংলাদেশের সংবিধানে ও আইনে চাকুরির ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। ফলে, একই ধরনের, একই জায়গায় ও সমপদে চাকরি করলে নারী-পুরুষ ভিত্তিতে তাদের মধ্যে কোন বৈষম্য করা যাবে না।
চাকরিজীবী হলেও কর্মজীবী নারীর গর্ভধারণের অধিকার রয়েছে। গর্ভধারণ কালে সন্মান জনক এবং হয়রানি মুক্ত কর্মস্থলের অধিকার রয়েছে একজন নারীর ।
ক. গর্ভধারণের কারণে কারো প্রতি কোন বৈষম্য করা যাবে না, তাকে চাকরিচ্যূত করা যাবে না বা তার বেতন বন্ধ করা যাবে না।
খ এমন কোন আচরণ বা মন্তব্য না করা যাতে তিনি শারীরিক বা মানসিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হন বা অপমানিতবোধ করেন;
গ. কোন ঝুঁকিপূর্ণ কাজে অথবা তার স্বাস্থ্যের প্রতি ঝুঁকিপূর্ণ এমন কোন কাজে নিয়োজিত না করা;
ঘ. তাকে ঝুঁকিবিহীন কাজে স্থানান্তর বা পদায়ন করা;
ঙ. কর্মকালীন লিফ্ট ব্যবহারে অগ্রাধিকার প্রদান করা;
মাতৃত্বকালী ছুটি লাভও কর্মজীবী নারীর অধিকার । সন্তান প্রসবের অব্যবহিত পরবর্তী আট সপ্তাহের মধ্যে কোন কাজ না করার অধিকার রয়েছে নারী কর্মীর। সন্তান প্রসবের পূর্ববতী ছয় মাস এবং সন্তান প্রসবের পরবর্তী আট সপ্তাহ মেয়াদের মধ্যে তাকে চাকুরী থেকে বাদ (ডিসচার্জ, বরখাস্ত, অপসারণ বা অন্যভাবে ) দেওয়া যাবে না। নারী কর্মী তার মালিকের কাছ থেকে তার সন্তান প্রসবের সম্ভাব্য তারিখের অব্যবহিত পূর্ববর্তী আট সপ্তাহ এবং সন্তান প্রসবের অব্যবহিত পরবর্তী আট সপ্তাহের জন্য প্রসূতিকল্যাণ সুবিধা পাওয়ার অধিকারী হবেন ।
কর্মক্ষেত্রে যৌনহয়রানি আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।এবিষয়ে হাইকোর্ট একটি বিখ্যাত রায় প্রদান করেছেন।উক্ত রায় অনুযায়ী সরকারি বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠানে যৌনহয়রানি প্রতিরোধে কমিটি গঠন করা বাধ্যতামূলক।আপনি কখনো এর শিকার হলে উক্ত কমিটির নিকট অভিযোগ করতে পারবেন।অথবা গুরুতর ক্ষেত্রে তৎক্ষণাৎ থানায় বা আদালতে মামলা করতে পারবেন।প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে যৌনহয়রানি প্রতিরোধে সহায়ক ও সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য শিক্ষামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করাও উক্ত রায়ে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।